উৎসব

আগে পূজার সময় সবাই দল বেঁধে পূজা দেখতে যেতাম। মুসলমানদের অনেককেই দেখতাম পূজায় যেতনা।অনেকে এই পূজা নিয়ে তুচ্ছ্য তাচ্ছিল্য করতো। কিন্তু কেন পূজায় যাবেনা বা কেন ওদের প্রসাদ খাওয়া যাবেনা তা কেও বলতোনা। ফলে দেখতাম অনেক হিন্দুরাই এই ব্যাপারটা নিয়ে,বেসিক্যালি ওদের আচরণের কারণে কষ্ট পেত।

নিজে মুসলমান হওয়ার পরে জানতে ও বুঝতে পারলাম বিধর্মীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে কেন মুসলমানরা যেতে পারবেনা এবং কেন তারা প্রসাদ গ্রহণ করেনা।

মুসলমানরা বিশ্বাস করে আল্লাহ এক, তার কোন অংশীদার নেই।তিনি একা এই বিশ্বজগতের মালিক।তিনি জন্ম নেননি ও কাওকে জন্ম দেননি। আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে অংশীদার করা সবচেয়ে বড় গুনাহ।

এখন হিন্দুদের পূজাতে ওরা যেই দেব দেবীদের পূজা করছে মুসলমানদের মতে তারা সেই দেব দেবীকে আল্লাহর স্থান দিচ্ছে।এখন যে মুসলিম সে কি এমন কোথাও যাবে যেখানে তার প্রিয় রবের স্থান একটা মূর্তিকে দেওয়া হচ্ছে? যেখানে আল্লাহকে তার সৃষ্ট জিনিসের মতো তুলনা করা হচ্ছে? এটা তো মুসলমানদের বিশ্বাসের শুধু বিপরীতইই না বরং এটা নিজের কাছে তার সৃষ্টিকর্তাকে অপমান করা (এটা একটা কথার কথা।কারণ আল্লাহকে অপমান করার ক্ষমতা মানুষের নাই।আল্লাহ কারও মুখাপেক্ষী নন)। তাহলে একজন মুসলিম কি সেখানে যেতে পারে? একজন হিন্দু যেমন কুরবানির সময় গরু কুরবানি দেওয়া দেখবেনা না বা কুরবানি দেওয়া গরুর গোস্ত খাবেনা, তেমনি একজন মুসলিমও কখনো পূজাতে এনজয় করতে যেতে পারেনা।তার এনজয় করারই প্রশ্ন উঠেনা।

একই ভাবে আল্লাহর স্থান দেওয়া কোন মূর্তির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা প্রসাদ গ্রহণ করাও মুসলিমদের জন্য কবিরা গুনাহ।

আবার খ্রিষ্টানরা যে যীশু খ্রিস্টকে ঈশ্বরের পুত্র ভাবে মুসলমানরা তাকে আল্লাহর একজন নবী হিসেবে দেখেন। সুতরাং যাকে একজন নবী ভাবা হয় তার জন্মদিন পালনের তো প্রশ্নই উঠেনা।কোন নবী রাসূল তাদের জন্মদিন পালন করেনি এবং এটা ইসলামের কোন অংশ না।

একই ভাবে মুসলমানরা বিশ্বাস করে ঈসা (আ) কে আল্লাহ সরাসরি জান্নাতে নিয়ে যান।উনি ক্রুশে মারা যাননি, সুতরাং ঈসা (আ) এর পুনরুত্থান পালনের তো প্রশ্নই উঠেনা। এটাও ইসলাম বিরোধী কনসেপ্ট।

সুতরাং একজন মুসলমান বিধর্মীদের কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাবেনা এটাই স্বাভাবিক। আর যদি সে নামে মুসলিম হয় তাহলে ভিন্ন কথা।

কোন মুসলমান যখন বিধর্মীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাবেনা তখন বিধর্মীদের রাগ হওয়ার বা অপমান করার কিছু নাই।বরং সে তার সৃষ্টিকর্তার সাথে কাওকে শরিক করা থেকে বিরত থেকে আল্লাহর প্রতি তার বিশ্বাস ও ভালোবাসাই শুধু প্রকাশ করেছে ।

উৎসব
নাইলাহ আমাতুল্লাহ
৬ নভেম্বর ২০১৮