কর্মফল!

★ন’ মাসের শিশু থেকে বৃদ্ধা, কেউই আজ নিরাপদ নয়। অতি আপনজনের কাছেও নয়। আইয়্যামে জাহেলিয়াতের সময়েও বোধ হয় নারীদের এত করুন পরিস্থিতিতে পরতে হয় নি!

সেদিন পত্রিকায় পড়লাম, বাবা মায়ের কাছেও মেয়েটি নিরাপত্তা পায় নি। (বিস্তারিত লিখতে রুচিতে লাগছে।)

★কল্লাকাটা গুজবের রেশ ধরে সত্যি সত্যি অনেকের গলা কাটা লাশের সংবাদ পাওয়া যাচ্ছিল। সবাই যার যার শিশুদের নিয়ে আতংকিত দিন কাটানো শুরু করলো।

বাসার বুয়াদের থেকে প্রায়ই শুনতে লাগলাম, অমুকের বাচ্চা চুরি হয়েছে, তমুকের বাচ্চাকে মায়ের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে!

যা রটে তার কিছুটা তো বটে! আবার তিল কে তাল করাও আমাদের প্রাচীন অভ্যাস।

এই গুজব নিয়ে সবাই ভয় পেলো…. চাইনিজ রা যেহেতু পদ্মা সেতুর কাজ শুরুর আগে ষাড় এর গলা কেটে উৎসর্গ করেছিল, তাই জনগণ ভাবতে লাগলো মানুষের গলা কাটাও সত্যি হতে পারে!!

কারো মাথায় কি একবারো আসলো না? একটা মুসলিম দেশে ঈমান আকিদার কি অবস্থা হলে এ ধরণের গুজব মানুষ বিশ্বাস করে বা সত্যে পরিণত করে??

চাইনিজ রা যখন পশু বলি দিয়েছিল, তখন কেন কেউ এই ভয়াবহ শিরকী কাজের প্রতিবাদ করে নি?

★কল্লাকাটার জের ধরে আসলো ছেলেধরা আতংক! এর রেশ ধরে গণপিটুনি খেয়ে মারা গেল নিরীহ কিছু মা বাবা। এতিম হল ফুলের নত নিষ্পাপ কিছু সন্তান।

অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, নিজের আপন সন্তান নিয়ে রাস্তায় বের হতে ভয় লাগে।

ভেবে পাই না, মানুষের ভেতর এত ক্ষোভ কোথা থেকে আসলো, কি করে মানুষ এতটা নিষ্ঠুর হতে পারে যে, পিটিয়ে পিটিয়ে কাওকে মেরেই ফেলে!!

কোন কোন অপদার্থ সেসব ভিডিও করে, তবুও আইন রক্ষাকারী বাহিনীকে খবর দেয় না।
.
.
.
প্রতিদিন এ ধরনের সংবাদ শুনতে শুনতে মানসিক ভাবে অসুস্থ বোধ করছিলাম। এসব অকল্পনীয় ভয়ংকর বিষয় যখন আর সহ্য হচ্ছিলো না….. জ্ঞানী সমাজের কেউ কেউ বলছিলেন, আল্লাহর গজব অতি নিকটে।

তাঁদের কথা মনে হয় সত্যে পরিণত হচ্ছে…..

মনে আছে, নমরুদের কাহিনী? তুচ্ছ মশা দিয়ে আল্লাহ, অহংকারী এ শাসক কে হত্যা করেন।

সুরাহ ফিল যে পড়েন সালাতের সময়.. সেই সুরার ইতিহাস মনে আছে? আবরাহার বিশাল হস্তী বাহিনীকে আল্লাহ ক্ষুদ্র আবাবিল পাখি দ্বারা পরাজিত করেন।

মানুষ ভুলে যায় তারা কত তুচ্ছ! কত নগন্য! কত অহংকার করি আমরা? নিকৃষ্টতম অপরাধে নিমজ্জিত হতেও বাঁধে না অনেকের৷ যারা অপরাধ করে না, তারা সহ্য করে, প্রতিবাদ করে না বা শাস্তি দেয় না অপরাধীকে।

অপরাধ সহ্য করাও কিন্তু পাপ!

.
.
.

আমাদের দেশে এখন ডেংগু মহামারী আকার ধারণ করেছে। সারা শরীর ঢেকে রাখলেও, মশার থেকে বাঁচা কি এতই সহজ?

তুচ্ছ মশার ভয়ে এখন রথী মহারথীরা কম্পমান। কামান দেগেও মশা তাড়ানো যাচ্ছে না।

আরো এক কারনে মশার নিধন করা যাচ্ছে না, তা হল অবিরত বৃষ্টিপাত। আবার বৃষ্টির জন্য দেশে নানা অঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। প্লাবিত হয়ে নিঃস্ব হচ্ছে হাজারো মানুষ।

বন্যা আঘাত করছে দরিদ্রদের আর মশা হামলা করছে অভিজাত ঢাকাবাসীদের।

ধনী দরিদ্র কেউ নিস্তার পাচ্ছে না। কেউ না…..

আমাদের কি এখনো টনক নড়বে না। মহান মালিক পরম করুনাময় এবং মহা শাস্তি দানকারীও।

রহমানুর রাহীমের কাছে ক্ষমা না চাইলে নিস্তার নেই কারো। অন্যায় বন্ধ না করলে… অন্যায় সহ্য করলে, এরকম গজব যদি চলতে থাকে?

আমাদের কি সেই শক্তি আছে, নিজেদের নিরাপদে রাখার?

ভাবুন… ভাবুন… ভয় করুন সর্ব শক্তিমান মালিক কে। তাঁর শাস্তিকে ভয় করার সময় কি এখনো আসে নি?

আল্লাহ্ যেন আমাদের মাফ করেন। বেশি বেশি ক্ষমা চাওয়ার সময় এখন…. এখনো সুযোগ আছে গজব থেকে পরিত্রাণ পাবার…..

কর্মফল

হাসনীন চৌধুরী

জুলাই ২৮, ২০১৯ইং