উপহার পেতে কার না ভাল লাগে?

কিন্তু উপহার দেয়ার যে আনন্দ, সেটা উপহার পাবার আনন্দের চেয়ে শত, না হাজারগুন বেশি! কোন উপহার কেবল এর বস্তুগত মান কিংবা আর্থিক মূল্য দ্বারা বিবেচ্য নয়, বরং এটি মনের ভেতর সঞ্চিত শ্রদ্ধা ভালোবাসার উপচে পড়া ফল্গুধারার এক রংধনুময় বহিঃপ্রকাশ। কাউকে উপহার দেয়ার চিন্তা মাথায় এলে প্রথমেই মনের মুকুরে ভেসে ওঠে প্রিয় মানুষটির মুখখানি। সেই চেহারার সাথে জড়িয়ে আছে কত স্মৃতি, কত ভাল লাগা, ভালোবাসা, সম্মান, শ্রদ্ধা! কাউকে উপহার দেয়া মানে তাঁকে নিয়ে ভাবা, তাঁর পছন্দ অপছন্দ বিবেচনা করা, তাঁর প্রয়োজন মাথায় রাখা, তাঁর একফালি হাসির আশায় সময় ব্যায় করা, শ্রম দেয়া। এই ভালোবাসাটুকুই উপহারের মূল উপজীব্য। সেজন্যই রাসূল (সা) বেশি বেশি উপহার আদানপ্রদান করার উপদেশ দিয়েছেন। কারণ এর মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্কের বাগানে নিত্য ফুটতে থাকে রঙ্গিন রঙ্গিন ফুল। 

রাজারাজড়াদের উপহার উপঢৌকনের বর্ণাঢ্য কাহিনী পড়ে আমাদের ধারণা হয়ে গিয়েছে উপহার হতে হবে হীরে জহরত, মনি মুক্তো বা স্বর্ণখচিত পোশাকের মতই মূল্যবান কিছু। কিন্তু ভালোবাসার মূল্য কি অর্থ দিয়ে মাপা যায়? আমরা যখন ছাত্রী ছিলাম তখন আমাদের কাছে বাবামায়ের কষ্টার্জিত অর্থের মূল্য ছিলো অনেক বেশি। আমরা খুব অল্প খরচে চলতাম, এর মধ্যেই সবাই মিলে আনন্দ করতাম, উপহার দিতাম। প্রায়ই আমরা একে অপরকে বাগানের ফুল, ফুল দিয়ে গাঁথা মালা, কার্ড, স্টিকার, কলম, নোটবুক বা বই উপহার দিতাম। এর মূল্য ছিল বাহ্যত অল্প, কিন্তু এর পেছনে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ কিংবা এর থেকে লব্ধ আনন্দের পরিমাণ কিছুতেই স্বল্প ছিলোনা। 

অনেক উপহার আছে যা আমরা উপহার হিসেবে বিবেচনাই করিনা, অথচ এগুলো অমূল্য! আমরা তখন চট্ট্রগ্রাম কলেজের ছাত্রী। ছোটি আর আমি কোন কাজে পার্সিভাল হিলে গেলে এক মুদি দোকানে দাঁড়িয়ে এক বোতল কোক কিনে দু’জনে মিলে শেয়ার করে খেতাম। সে সময় দশটাকা দিয়ে এক বোতল কোক কিনে খাওয়া ছিল আমাদের জন্য বিলাসিতা। ও কয়েক ঢোক খেয়েই বলতে শুরু করত, ‘আমি আর খেতে পারছিনা, বাকীটা তুমি খাও’। উদ্দেশ্য আমাকে বেশি খাওয়ানো। খাবার পরিমাণটা অল্প হলেও সেটা দু’জনে মিলে উপভোগ করা ছিল আমাদের জন্য বন্ধুত্বের বহিঃপ্রকাশ। আমার ভালদাদু, আমার দাদার ছোটবোন। ভালদাদু নামটা আমারই দেয়া। দাদু আমার জন্য রান্না করার সময় বাছা চাউল আবার বাছত। কারণ আমি খাবার সময় মরা চাউল বাছি। এটাই ভালোবাসা। বিশ বছর পর আবার অ্যামেরিকায় বান্ধবী মমির সাথে দেখা। ওর বাসায় খেতে বসে দেখি ও আমার পছন্দের সব আইটেম রান্না করেছে, এমনকি ভাতের সাথে আচার দিতেও ভোলেনি। মানুষের এই ছোট ছোট রুচিপছন্দগুলো মনে রাখা, এটাই কি আন্তরিকতা নয়? 

সবচেয়ে ভাল উপহার সেটি যা ব্যাক্তির পছন্দ এবং প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে দেয়া হয়। এতে বোঝা যায় আপনি সেই ব্যাক্তিকে কত ভালভাবে জানেন, তাঁর পছন্দ অপছন্দ আপনার কাছে কতখানি গুরুত্বপূর্ণ, তাঁর প্রয়োজন আপনার কাছে কতটুকু অর্থবহ। প্রচুর মূল্য দিয়ে কিছু কিনে দেয়ার তুলনায় ব্যাক্তির পছন্দনীয় বা প্রয়োজনীয় বস্তুটি তাঁকে উপহার দেয়া অনেক বেশি আবেগীয় মূল্যসম্পন্ন। তাই সবচেয়ে সুন্দর উপহার তাঁরাই দিতে পারেন যারা সবচেয়ে বেশি আন্তরিকতাপূর্ণ। অবশ্য এক্ষেত্রে উপহারগ্রহীতার সাথে উপহারদাতার সম্পর্কের মাত্রাটাও একটা বড় বিবেচ্য বিষয়। আপনি তাঁকে ততখানিই ভাল জানবেন যতখানি আপনি তাঁর সাথে মেশার সুযোগ পাবেন।

আমি সবসময় মনে রাখার চেষ্টা করি কার কোন উপহারে আমি আপ্লুত হয়েছিলাম, যে অনুভূতি আমাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল দীর্ঘ সময়। পরে কাউকে উপহার দেয়ার সময় এই স্মৃতিগুলো কাজে লাগে। যেমন বান্ধবী সিমিন আমাকে বিয়ের সময় একটি বেডসাইড ল্যাম্প উপহার দিয়েছিল। পরে ওকে বকা দিলাম, ‘তোমাদের না বলেছি বিয়েতে কেউ কিছু না দিতে?’ ও বলল, ‘শোন, জিনিসটার দাম অল্প। কিন্তু এর পেছনে আমার একটা বিশেষ উদ্দেশ্য আছে। কর্মব্যাস্ত দিনের শেষে তুমি ঘুমাতে যাবার আগে শেষ কি কাজটা করবে বল তো? বেডসাইড ল্যাম্পটা নিভাবে। তখনই তোমার আমার কথা মনে পড়বে। তোমাকে এই উপহারটা দেয়ার উদ্দেশ্য যেন প্রতিদিন ঘুমাতে যাবার আগে তোমার আমার কথা মনে পড়ে, আমি যেন তোমার দিনশেষের প্রার্থনার অংশ হতে পারি’। 

কিছু কিছু উপহারের আর্থিক মূল্যের চেয়ে আবেগীয় মূল্য অনেক বেশি। ১৯৭১ সাল। ১৫ই ডিসেম্বর। চারিদিকে মূহুর্মূহু বোমা বর্ষিত হচ্ছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের এক বাড়ীতে সিঁড়ির নীচে আশ্রয় নিয়ে বিয়ে পড়ানো হচ্ছে আমার বাবামায়ের। ষোড়ষী বধূটির মন খারাপ। যুদ্ধের বাজারে কোথাও টিকলি পাওয়া যায়নি। গ্রামের মেয়ে। যতই যা কিছু দেয়া হোক না হোক, বিয়ের সাজসজ্জার অংশ হিসেবে টিকলি তার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে বরের মন খারাপ। শ্বশুরবাড়ি থেকে হাতঘড়ি দেয়া হয়েছে, কিন্তু যুদ্ধের বাজারে ভাল ঘড়ি পাওয়া যায়নি। এই কাহিনি আমাদের সবার জানা ছিল। আমি যখন চাকরী করতে শুরু করি তখন থেকে টাকা জমাতে শুরু করি। বাবামায়ের পঁচিতশতম বিবাহবার্ষিকীতে আমরা ভাইবোনরা মিলে বাবাকে একটি ঘড়ি এবং আমার ভাই আহমাদের পরামর্শ মোতাবেক মাকে টিকলির পরিবর্তে একজোড়া কানের দুল উপহার দেই। এটা ছিল আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার। কারণ এর মাধ্যমে আমরা বাবামায়ের পঁচিশ বছরের পুরোনো কিছু শখ পূরণ করতে সক্ষম হয়েছিলাম।

অনেকসময় আন্তরিক উপহারগুলো হয়ে থাকে অতি সাধারন, কিন্তু এর পেছনে ভাবনা বা ভালোবাসার পরিমাণ হয় অসাধারন। যেমন কেউ কিছু খেতে পছন্দ করে। আপনার বাসায় সেই জিনিসটি রান্না হয়েছে। আপনি তাঁকে এর অল্প কিছু পাঠিয়ে দিলেন অথবা তাঁর জন্য তুলে রাখলেন। আপনি যে তাঁকে মনে করলেন, এটাই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। যেমন তাসনিন আপা দইবড়া বানালে আমার জন্য পাঠিয়ে দিতেন। কারণ আমি এটি খেতে ভালবাসি কিন্তু বানাতে শিখিনি। হাতে বানানো উপহার সবসময় ক্রীত উপহারের চেয়ে বেশি মূল্যবান। কারণ এর সাথে উপহারদাতার সময়, শ্রম, ভাবনা এবং ভালোবাসার স্পর্শ মিশে থাকে। আমার এক ছাত্রী আমাকে নিজ হাতে কাজ করে একটি জামা উপহার দিয়েছিল। সেটি আমি আজও রেখে দিয়েছি। কারণ এটি ছিল তার ভালোবাসাপ্রসূত শ্রমের সাক্ষ্য।

কিছু উপহার আছে যেগুলো কোন উপলক্ষ্য কিংবা উপসর্গ ব্যাতিরেকেই হঠাৎ করে দেয়া হয়ে থাকে। এগুলো আমার কাছে শ্রেষ্ঠ উপহার। রাসূল (সা) এমন উপহার প্রায়ই দিতেন। যেমন কেউ বলল, ‘আপনার চাদরটা তো ভারী সুন্দর!’ আর তিনি সাথে সাথে চাদরটি খুলে তাঁকে দিয়ে দিলেন। আমি যখন ক্যানাডা যাই, আমার সহকর্মী ছাত্রী সবাই মিলে এক বিদায়ী অনুষ্ঠান করেন। অনুষ্ঠান শেষে কিছু ছাত্রীর সাথে বসে কথা বলছিলাম। হঠাৎ আমার ছাত্রী সালেহা নিজের জামা থেকে ব্রুচটা খুলে আমাকে পরিয়ে দিয়ে বলল, ‘এটা ওখানেই বেশি ভাল মানাচ্ছে’। কোন আনুষ্ঠানিকতা নয়, বাহুল্য নয়, ‘স্পার অফ দ্য মোমেন্ট’ যাকে বলে। কিন্তু ঐ ব্রুচটা দেখলেই ওর কথা মনে হয়, জেগে ওঠে অনেক আনন্দ, বেদনা আর ভালোবাসার স্মৃতি। ক্যানাডা থেকে চলে আসার সময় আমাদের হাসিখুশি হাসি ভাবী এক দাওয়াতে আমাকে দেখে বললেন, ‘ভাবী, আপনি এই জামাটা আর পরবেন না। বাসায় গিয়ে এটা খুলে রাখবেন। এরপর আমাকে দিয়ে যাবেন’। ভাবীর এই আন্তরিকতাপূর্ণ আবদার আমার কি যে ভাল লাগল! আমি জামাটা ধুয়ে ইস্ত্রি করে ভাবীকে পৌঁছে দিয়ে এলাম। ভালো লাগা, ভালোবাসার কথা এতটা হৃদ্যতার সাথে ক’জন বলতে পারে?

উপহারদাতার সাথে পরিচিতির ক্ষেত্রে দুরত্ব থাকলে অনেকসময় উপহার নির্বাচন করা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে কিছু কিছু উপহার আছে যেগুলো সর্বাবস্থায় কাজে লাগে। যেমন বই, খাতা, কলম, ঘরোয়া ব্যাবহার্য জিনিসপত্র, চাদর, পোশাক, সাজসজ্জার উপকরণ ইত্যাদি। কিন্তু এগুলোর ক্ষেত্রেও উপহারগ্রহীতার রুচিপছন্দ সম্পর্কে কিছুটা জানার প্রয়োজন রয়েছে। যেমন যিনি বিজ্ঞান পছন্দ করেন তাঁকে আপনি উপন্যাস ধরিয়ে দিলে তিনি খুব একটা আনন্দিত না হতে পারেন। আবার কেউ কেউ পোশাক বা সাজসজ্জার ব্যাপারে সংবেদনশীল হতে পারে। তখন এই উপহার তাঁকে আনন্দ দেয়ার পরিবর্তে বিব্রত করতে পারে , এমনকি বিরক্তির উদ্রেক করতে পারে। 

তবে কিছু কিছু জিনিস পারতপক্ষে উপহার হিসেবে দেয়া উচিত নয় যদি না সেই ব্যাক্তি উপস্থিত থাকে। যেমন জুতো। প্রথমত কারো পায়ের সাইজ জানা থাকলেও একেক জনের একেক ধরণের জুতো আরাম লাগে বা একেক ধরণের জুতোয় সমস্যা থাকতে পারে। অনেক সময় লম্বায় পায়ের সাইজ ঠিক হলেও পাশে ফিট না হতে পারে। কিন্তু একেক সময় সবদিক ঠিক হয়েও শেষরক্ষা হয়না। আমি তখনো ছাত্রী। এক স্কুলে পার্টটাইম কাজ করি। দিনশেষে এক সিনিয়র সহকর্মী বললেন, ‘চল, তোমাকে বাসায় নামিয়ে দেই’। আমার বাসা ওনার বাসার পথেই। গাড়ীতে উঠে জানলাম সেদিন ভাইয়ার জন্মদিন। সেই উপলক্ষ্যে আপা তাঁকে পাঞ্জাবী, পাজামা আর একজোড়া স্যান্ডেল উপহার দিয়েছেন। কিন্তু সেদিন সকালে তাদের ঝগড়া হয়েছে। ভাইয়া বললেন, ‘বুঝলে রেহনুমা, তোমার আপার সাথে ঝগড়া হয়েছে দেখে সে আমাকে জুতো দিল!’ আমি পড়লাম বিপদে। হাসলে আপা বেজার হবেন, না হাসলে ভাই। 

আমার ভাল লাগে মানুষকে তাদের পছন্দের জিনিসটি দিতে, বিশেষ করে যা তাদের কাজে লাগবে, তাঁরা অবশ্যই জিনিসটি ব্যাবহার করবেন। তাই ব্যাক্তিগতভাবে আমি পছন্দ করি কাউকে নিয়ে বাজারে গিয়ে তাদের কিসের দিকে আকর্ষন তা খেয়াল করতে এবং চুপটি করে তাদের পছন্দের জিনিসটি কিনে তাদের উপহার দিয়ে দিতে। তাহলে নিশ্চিত হওয়া যায় জিনিসটি তাদের পছন্দ হোল, কাজেও লাগল। যে জিনিস কারো কাজে লাগবেনা তা কেবল তাঁর ঘরে আবর্জনাই বৃদ্ধি করবে। কারণ আবেগীয় মূল্যের কারণে তা না যায় দেয়া, না যায় ফেলা। তবে অনেক বুদ্ধিমান ব্যাক্তি এই ধরণের উপহারগুলো রিসাইকেল করে দেন। সেক্ষেত্রে সেটি অন্তত অন্য কারো কাজে লাগে।
সবচেয়ে কঠিন হোল সামাজিক কারণে যে ফর্মাল উপহারগুলো দিতে হয় সেগুলো নির্বাচন করা। উপহারগ্রহীতার সাথে সম্পর্ক ব্যাতিরেকে তাঁর রুচিপছন্দ বুঝা বা তাঁর জন্য উপহার নির্বাচন করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সেসব ক্ষেত্রে কেবল উপহারই নয়, পরিবেশন পদ্ধতিটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উপহারটি সুন্দরভাবে র‍্যাপ করে বা প্যাকেটে ভরে দেয়ার ওপর উপহারের ইম্প্রেশন অনেকখানি নির্ভর করে। তবে উপহার যাই হোকনা কেন, এর সাথে একগুচ্ছ ফুল কিন্তু চমৎকারভাবে পরিবেশনাকে প্রভাবিত করতে পারে।

উপহার দেয়া একটি অসাধারন গুণ। কারণ এটি স্বয়ং আল্লাহতাআ’লার গুণ। তিনি উপহার দিতে ভালোবাসেন এবং দেয়ার ব্যাপারে কার্পণ্য করেন না। আমাদের এই শরীর, এই চোখজোড়া, এই কান দু’টো, এই ঠোঁট-জিহবা-স্বর, হাত পা, সুস্থতা, পরিবার, পরিবেশ পরিস্থিতি সবই আল্লাহপ্রদত্ত উপহার। তিনি পছন্দ করেন তাঁর বান্দারা তাঁর গুণাবলী অনুসরণ করবে, যদিওবা তা হয় অত্যন্ত ক্ষুদ্র মাপে। কিন্তু নানান কারণে আমাদের মাঝে উপহার দেয়ার প্রচলন হ্রাস পাচ্ছে। আর্থসামাজিক কারণ তো বটেই, আমাদের চিন্তাচেতনার পরিবর্তনও এর জন্য বহুলাংশে দায়ী।

আমরা নিজেদের জীবনপ্রণালী এতখানি বিলাসবহুল করে ফেলছি যে নিজেদের খরচ কুলিয়ে ওঠাই দায় হয়ে পড়ছে, অন্যের জন্য ব্যায় করার সুযোগ কোথায়? অপরদিকে আমরা ছোট ছোট উপহার দেয়া থেকে বিরত থাকি, কেবল বড় বা দামী উপহারকেই মূল্যায়ন করি। ফলে টুকটাক উপহার আদানপ্রদানের চর্চা আমাদের মাঝে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। ব্যাবহৃত জিনিস এখন আর উপহার হিসেবে প্রযোজ্য নয়, এমনকি অব্যাবহৃত জিনিস রিসাইকেল করলেও আমরা ভাল মনে করিনা, ফলে উপহার দেয়া কঠিন হয়ে যায়। অথচ আমরা ভুলে যাচ্ছি উপহার কি দেয়া হোল সেটি নয়; বরং কে দিল, কাকে দিল এবং কি অনুভূতি নিয়ে দিল সেটিই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি এভাবে মূল্যায়ন করতে শিখি, তাহলে আবার আমাদের পক্ষে উপহার আদানপ্রদান সহজ হয়ে যাবে। সম্পর্কের বাগিচাগুলো ভরে উঠবে সুদৃশ্য এবং সুগন্ধি পুষ্পপল্লবে।

উপহার
রেহনুমা বিন্ত আনিস
(১১ ডিসেম্বর ২০১৭)