বীজ থেকে মহীরুহ

কৃতজ্ঞ থাকাটা একটা অভ্যাসের ব্যাপার। পরিবেশের উপর অনেক সময় আমি এই অভ্যাসকে প্রভাবিত হতে দেখেছি।

অনেক মানুষ আছেন, যারা বিয়েবাড়ির দাওয়াত খেয়েই শুরু করবেন, খাবারটা গরম ছিল না, রেজালায় লবণ হয়নি, বউটা মোটা, বরটা খাটো ইত্যাদি ইত্যাদি।

এরা কিন্তু নিজের পরিবারের মানুষের সাথে এই আলাপগুলো করছে। নিজের স্বামী/স্ত্রী, পুত্র-কন্যার সাথে। এই আলাপের মাধ্যমে তারা নিজেদের পরিবারকেই অকৃতজ্ঞতার পাঠ পড়াচ্ছে।

এই মানুষগুলো যখন দাওয়াতের আয়োজন করে তখন কি সব পারফেক্ট থাকে? না।

এরা অন্যের চেহারার সমালোচনা করছে, এরা কি পারফেক্ট? না।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই ধরনের মানুষ মনে করে, যেহেতু আমি বেটার হতে পারবোনা, অন্যের ক্ষুদ্রতা নিয়ে আলাপ করলে আমার ক্ষুদ্রতা ঢেকে যাবে। কিন্তু এটা ভুল ধারণা। মাইক যার হাতে থাকে, ক্যামেরাও তার দিকেই থাকে। আপনি যাদের সামনে অন্যকে বাজে বলছেন, অন্যরা আপনাকেই সবার আগে জাজ করে নিচ্ছে।

আর এই অকৃতজ্ঞ মানসিকতা নিজের ও নিজের পরিবারের জন্য ক্ষতিকর। আপনি বিয়েবাড়ির দোষ ধরে যে শিক্ষা দিলেন, আপনার সন্তান বাসায় তা প্রয়োগ করবে। 

-তরকারিতে আজকে ঝাল কম কেন?
-ডিমের কুসুম শক্ত হয়নি কেন?
-আমার স্কুলের ব্যাগ নীল কেন? কালো না কেন?

এই সন্তান বড় হয়েও কৃতজ্ঞ থাকতে পারবেনা।

বউ যখন নিউবর্ন নিয়ে হাবুডুবু খাবে, তার কাছে মনে হবে বউ সারাদিন বাসায় রেস্ট নেয়। জামাই যখন বাজার করে আনবে, তার মনে হবে ৫০টাকার সবজি ১৫০টাকায় কিনে ঠকেছে ইত্যাদি।

একটা ছোট বীজ একসময় মহীরুহ হয়ে উঠে। সন্তানের হৃদয়ে কৃতজ্ঞতার বীজ বুনে দিন। সে এককজন সুখীমানুষ হয়ে বাঁঁচবে। আর আল্লাহ বলেছেন, যে কৃতজ্ঞ হয়, আল্লাহ তাকে আরো দেন। একটা ছোট্ট অভ্যাস একজন মানুষের দুনিয়া ও আখিরাত সুসজ্জিত করতে পারে। আর অভ্যাসের বীজটা আপনার হাতে।

বীজ থেকে মহীরুহ
নূরুন আলা নূর
(২৪ ডিসেম্বর ২০১৭)