অনিরাপত্তার বলয়

এই যে দিনগুলো দেখছি, বছর চারেক আগেই এমন ভয়ংকর অদ্ভুত চিন্তাগুলো কেন জানি মাথায় আসতো, তখন কয়েকজনের সাথে আলাপ করায় বেশিরভাগই উত্তর দিয়েছিলো আমাকে ডিপ্রেশনে ধরেছে (কথাটা কিছুটা সত্যও ছিলো!) অনেক বেশি হাবিজাবি চিন্তা করছি, স্ট্রেস নিচ্ছি ইত্যাদি। বুঝেছিলাম কাউকে বলে লাভ নেই, যা করার নিজেকেই করতে হবে।

আসেন টেনশান আরেকটু বাড়াই! এই যে বুড়োগুলোর থেকে বাচ্চাকে কেমনে বাচানো যায় সেই নিয়ে চিন্তা করছেন জানেন কি বাচ্চারা বাচ্চাদের দ্বারা এবং ক্লাসমেইটদের দ্বারাও এবিউজড হয়!? আল্লাহ আমাকে অনেক ঘটনার সাক্ষী বানিয়েছেন হয়তো এই কারনেই আমার সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়।

প্রায় ১৬/১৭ বছর আগের কাহিনি, গ্রামে একটা ৮ বছরের ছেলে বাচ্চা ৬ বছরের মেয়ে বাচ্চাকে নিয়ে বিবস্ত্র অবস্থায় দরজা বন্ধ ঘরের ভেতর ধরা পরে। ছোটমানুষ খেলছিলো!! বলে ধামা চাপা দেওয়া হয় ঘটনাটি৷ এরপর সেই ছেলের এখন বয়স কতো? সে কীই বা করে বেড়ায়!? ভাবতেও আতংক লাগে!

৯ বছর আগে কিন্ডারগার্টেন এর এক ছেলে বাচ্চা, প্রিস্কুলের এক মেয়ে বাচ্চার প্যান্টের ভেতর হাত ঢুকিয়ে দুনিয়ার রহস্য!!! উদঘাটন করছিলো। কেন জানি সেটা আমিই দেখেছিলাম! স্কুল কর্তৃপক্ষ ও সেটা বাচ্চা বেবি! বলে উড়িয়ে দিয়েছিল!

৮-৯ বছর আগের কথা ঢাকা শহরের সনামধন্য একটি “বাংলা মিডিয়াম” (সব সময় ইংলিশ মিডিয়ামকেই নষ্টামির জন্য ফোকাস করা হয় তাই বিশেষ ভাবে উল্লেখ করলাম) স্কুলে ক্লাস ৮ এর বাচ্চার ব্যাগে ক্লাস মেটসরা পর্ণ ম্যাগাজিন ঢুকিয়ে দেয়। এবং নিয়মিত ভাবে নতুন সংখ্যা বের হলেও সেটাও চালাচালি করা হয়!

নিজে যখন স্কুলে পড়তাম তখন ট্রেন্ড ছিলো কার কয়টা গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড সেটার উপর বেইজ করে তার লেভেল অভ স্ট্যান্ডার্ড (আধুনিকতা!!) ঠিক হবে!

বর্তমান স্কুলের ট্রেন্ড কী জানেন??? কে কয়জনের সাথে বিছানায় গিয়েছে! কতো ছোট ক্লাসে সে এই বিষয়ে হাইয়ার ডিগ্রি অর্জন করেছে (ভাষা আর আসছে না হাতে!)

একটা ১০-১২ বছরের ছেলে আর সমবয়সি কোন মেয়েকে একা খেলতে দেখলে অবজার্ভ করুন, তাহলেই বুঝবেন কোন কালা যুগে আছেন!!

বড়দের কাছে সেইফ না, ছোটদের কাছে সেইফ না তাহলে কোথায় সেইফ!? 
আপনার দুই চোখের সামনে! জি, আর কোথাও সেইফ না আপনার আমার বাচ্চারা।

কোথাও গেলে চোখে চোখে রাখা, মেয়ের ছবি তুলতে নিষেধ করা, কারো সাথে বাইরে যেতে না দেওয়া ইত্যাদি কারনে অনেকের কাছেই নানা সময়ে খারাপ হতে হয়। তারা “মাইন্ড” ও করেন। কিন্তু সেই “মাইন্ডের” চেয়ে বাচ্চার সেইফটি আমার কাছে বেশি ইম্পর্টেন্ট মনে হয়।

বাচ্চাদের একলা খেলতে দেওয়াটাও এখন সেইফ না! পারভার্ট গুলা রাস্তা ঘাটে বিভিন্ন যায়গায় মেয়ে বাচ্চার ছবি তুলে পর্ণ সাইটে দেয়, সেই খবর কী রাখেন?

ঘটা করে আবার অনেকেই বলে থাকেন, “আমাদের পরিবার, আত্বীয়স্বজন এমন না”, সেই আবার বাচ্চার কানে কানে বলে রাখেন ” ওসব কাউকে বলো না”! হতে পারে সেই অসহায় বাচ্চাটা আপনার বাচ্চারই ক্লাসমেইট!

সব কিছু চিন্তা করে পাগলপ্রায় হয়ে হোমস্কুলিং এর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম! দেশের শিক্ষার অবনতি, ভালো মানের শিক্ষা ব্যবস্থার আকাশ্চুম্বি খরচের সাথে এটাও ছিল অন্যতম কারন। যেটা মানুষকে বললে হেসেই উড়িয়ে দিয়ে বলে, “আর মানুষের বাচ্চা পড়ে না স্কুলে? ওসব বাবা মায়ের বুঝি চিন্তা নাই, হুহ!”

আছে ভাই আছে৷ যে যার চিন্তা নিয়ে যেটা ভালো মনে হয় করুক! আমি আমার সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট আলহামদুলিল্লাহ!

গত ৭ দিনের নিউজে আমি আরো ডিটারমাইন্ড হয়েছি এই ব্যাপারে। আল্লাহ যেন পথচলাটা সহজ করেন…

অনিরাপত্তার বলয়
সাকিবা আহম্মদ

জুলাই ০৮, ২০১৯ইং