একটি ঘৃণিত আচরণ

Mocking বা বিদ্রুপ করা ইসলামে একটি অপরাধ। ‘Meme culture’ এ এতটাই অভ্যস্ত হয়ে গেছি আমরা যে অজান্তেই এবং অনায়াসেই করে ফেলছি এই ঘৃণ্য ‘অপরাধ’টি। আমাদের জন্য যেটা সামান্য entertainment মাত্র, সেই সামান্য জিনিসটাই হয়তো আমাদের against এ যাবে; আমাদের সরল মনে শেয়ার করা একটা পোস্ট ই হয়তো আমাদের বিপদের কারণ হয়ে যেতে পারে কিয়ামত এর দিনে| হোক না বিদ্রুপ করা ব্যক্তিটি অমুসলিম কিংবা কোনো celebrity; কে বলল যে তাদেরকে mock করা okay?

একজন মুসলিম সবসময়ই তাঁর কথা ও কাজের ব্যপারে সচেতন থাকবে। সে কখনোই ফালতু কথা বা কাজে মনোনিবেশ করবে না। যদিওবা সমাজ এ ধরণের কথা বা কাজকে বাহবা দেয়। কারণ একজন মুসলিম এর কাছে ইসলাম শুধুমাত্র কিছু ধর্মীয় আচারাদি নয়। বরং তাঁর জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রই নির্ধারিত হয় ইসলাম দ্বারা। কুরআন তাঁর পথপ্রদর্শক।

একটু দেখি এই ব্যাপারে ইসলাম আসলেই কী বলে –

আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে বলেনঃ
لَّا يُحِبُّ ٱللَّهُ ٱلۡجَهۡرَ بِٱلسُّوٓءِ مِنَ ٱلۡقَوۡلِ إِلَّا مَن ظُلِمَ‌ۚ وَكَانَ اللّهُ سَمِيعًا عَلِيمًا
আল্লাহ কোন মন্দ বিষয় প্রকাশ করা পছন্দ করেন না। তবে কারো প্রতি জুলুম হয়ে থাকলে সে কথা আলাদা। আল্লাহ শ্রবণকারী, বিজ্ঞ। [সূরা আন -নিসা, ৪:১৪৮]

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন- “বান্দা যখন ভালোমন্দ বিচার না করেই কোন কথা বলে, তখন তার কারনে সে নিজেকে জাহান্নামের এত গভীরে নিয়ে যায় যা পূর্ব ও পশ্চিমের দূরত্বের সমান”। (বুখারী ও মুসলিম)

তিনি আরো বলেছেন যে, “ব্যক্তি আল্লাহ এবং পরকালের প্রতি ঈমান রাখে সে যেন ভালো কথা বলে অন্যথা চুপ থাকে।” (বুখারী ও মুসলিম)

আল্লাহ তা‘আলা সূরা হুমাজাহ তে বলেনঃ
وَيْلٌ لِّكُلِّ هُمَزَةٍ لُّمَزَةٍ
‘ধ্বংস তাদের জন্য, যারা অগ্র-পশ্চাতে দোষ বলে বেড়ায়।’ (সূরা হুমাজাহ-১)

এ ব্যাপারে সূরা হুজুরাত এ স্পষ্ট নির্দেশনা এসেছে –

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَومٌ مِّن قَوْمٍ عَسَى أَن يَكُونُوا خَيْرًا مِّنْهُمْ وَلَا نِسَاء مِّن نِّسَاء عَسَى أَن يَكُنَّ خَيْرًا مِّنْهُنَّ وَلَا تَلْمِزُوا أَنفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ بِئْسَ الاِسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ وَمَن لَّمْ يَتُبْ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ
“মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে।
তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই যালেম।” [সূরা হুজুরাত : ৪৯: ১১]

আল কুরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন ‘laghwun’ বা ফালতু কথা/কাজ থেকে বিরত থাকতে –
সূরা মু’মিনূন এ মু’মিনদের কিছু গূণাবলি বর্ণনা করে আল্লাহ বলেছেন –
وَالَّذِينَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُونَ
“যারা অনর্থক কথা-বার্তায় নির্লিপ্ত”, [সূরা মু’মিনূন, ৩১ঃ৩]

এবং সূরা ক্বাফ এ আল্লাহ বলেছেন –
مَا يَلْفِظُ مِن قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ
সে যে কথাই উচ্চারণ করে, তাই গ্রহণ করার জন্যে তার কাছে সদা প্রস্তুত প্রহরী রয়েছে। [সূরা ক্বাফ, ৫০ঃ১৮]

আমাদের প্রতিটি কথা ও কাজ লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। যা কিয়ামতের দিন আমাদের সামনে তুলে ধরা হবে। সেদিন আমরা কী ধরণের আমলনামা দেখতে চাই তা decide করার সময় এখনই।

……………………………….

একটি ঘৃণিত আচরণ
আমিনা আফরোজ