রিয়া

দাউদ ইবনু আবি হিন্দ ৪০ বছর যাবত সিয়াম রেখেছিলেন, অথচ তাঁর স্ত্রী এ ব্যাপারে কিছুই জানতেন না।

আলী ইবনু আবি তালিব (র) এর নাতির ছেলে, যাইনুল আবিদীন ১০ বছর ধরে মদীনার গরীব লোকদের খাবার দিতেন কিন্তু কেউ জানতে পারতো না কে তাদের খাবার দিচ্ছেন।

আল আ’আমিশ (স) বলেন, আমি ইবরাহীম আন নাখা’ঈ (র) এর কাছে গিয়ে দেখলাম তিনি কুরআন পড়া শুরু করেছেন এবং একটানা পড়েই যাচ্ছেন। কিন্তু অন্য কেউ আসার সাথে সাথে তিনি কুরআন পড়া বন্ধ করে পাশে সরিয়ে রাখতেন।

সালাফরা রিয়া নিয়ে এতটাই তটস্থ থাকতেন! তাঁরা তাদের আমল গোপন করা নিয়ে এতটাই অস্থির থাকতেন। অথচ আমরা এর বিপরীত! কী কী আমল করছি তা না দেখানো অব্দি শান্তি কই।

যেমন- কী কী বই কিনলাম কিংবা উপহার পেলাম, কিংবা কী কী বই পড়ার গোল সেট করলাম তা ফেইসবুকে পোস্ট না দিলে হয় আমাদের?

বইয়ের সাথে কফির কাপ, নোটবুক আর কলম – আমাদের মোটামুটি সবার এমন ছবি তোলা কিংবা পোস্ট করা আছে।

শুধু বই না, কোন কোর্স করছি, ফাতওয়া বিষয়ক কমেন্ট- ইত্যাদিও আমাদের প্রমাণ করা লাগেই।

বলতে পারেন, আপনি আমাদের নিয়ত নিয়ে জাজ করছেন কীভাবে ?

আমি আসলে জাজ করছিনা। আমি সেটা করার কেউ না, কারণ আমিও একই রোগের রোগী দুঃখজনক ভাবে।

তবে, খেয়াল করেছেন, বইটা আমাদের কতদিনে শেষ হয়? কিংবা আদৌ শেষ হয় কিনা? কখনো খেয়াল করে দেখেছেন, কোন একটা আমল করছেন বা করবেন বলেছেন কাউকে, ব্যাস, কাজ আর আগাচ্ছেনা?

বদ-নজর সত্যি। রিয়া বা লোক দেখানো ইবাদাত লোভনীয় কিন্তু ছোট শিরক।

আল্লাহ আমাদের নিয়তটাকে পরিস্কার রাখুক সবসময়, আমীন।

তথ্যসূত্রঃ ধূলিমলিন উপহার
মুসা আহমেদ জিবরিল


রিয়া
– উম্মে সুমাইয়্যা

(২২/০৩/২০১৯)