সরল পথ

আমরা মুসলিম হলেই ভাবি আমরা হেদায়েতপ্রাপ্ত, জান্নাত আমাদের জন্য, কিংবা ক’দিন হয়তো জাহান্নামে থাকতে হবে, এরপর তো জান্নাতে যাবোই।

আর যদি কিছুটা প্র্যাক্টিসিং হই, তাহলে কথাই নেই, আমরা ভেবে বসি আমাদের ভুল নেই, ত্রুটি নেই। আরো ভয়ংকর ব্যাপার হল, আমাদের দেখে অন্যরা ভাবে ‘অমুক এত প্র্যাক্টিসিং, অমুক তো জান্নাতের টিকেট প্রাপ্ত।”

আমাদের হাজ্জ্ব, মাঝ রাতের তাহাজ্জুদ, আমাদের নিকাব, হাতের গ্লাভস, মুখ ভরা দাড়ি, আমাদের আরবী জানা- এসব কিছু যেন আমাদের মধ্যে একটা ‘পিওর পিওর’ আবেশ তৈরী করে রাখে।
আর আমাদের ব্যাপারে অন্যদের পসিটিভ জাজমেন্ট সাথে যেন ঘি ঢালে আরো।
_

যারা রেগুলার নামাজ আদায় করেন, তারা দিনে নিদেনপক্ষে ১৭বার সূরা ফাতিহা পড়েন। মোটামুটি অনেকেই এই সূরার অর্থ জানেন, সাথে অনেকে জানেন তাফসীর।

তাহলে বলুন তো, ৬ নং আয়াতে ‘আমাদেরকে সরল পথ দেখাও’ – এই দুয়াটি কেন জুড়ে দেয়া হল এতবার পঠিত সূরাটির মধ্যে যেখানে সূরাটি পড়ছে মুসলিমরাই ??

এর কারণ হচ্ছে, আমরা নিজেদের যতই পারফেক্ট, পরহেজগার কিংবা দ্বীনদার ভাবি না কেন, আমাদের প্রত্যেকের প্রতি মুহুর্তে আল্লাহ্‌র গাইডেন্স দরকার। আমাদের প্রত্যেকেরই ভুল হয়, প্রত্যেকেরই কোন না কোন বিষয়ে অজ্ঞতা আছে, আমরা প্রত্যেকেই বিভিন্নরকম লালসা আর দুর্বলতার কাছে কম বেশি বাধা পড়া, আর এগুলো যথেষ্ট আমাদের মিসগাইড করতে, আমাদের কুপথে পরিচালিত করতে। তাই সূরা ফাতিহা কেবল একটি সূরা না, এটি একটি দুয়া।

দুয়াটি যত বুঝবো, তত উপলব্ধি করবো নিজেদের সীমাবদ্ধতা, তত বুঝবো একে ওকে জাহিল বলে আমরা পার পেয়ে যাবোনা, আমাদের মধ্যেও কোন না কোন বিষয়ে জাহিল হওয়ার উপকরণ আছে/ থাকতে পারে। আর সে ভয়েই আমরা আমাদের রব্ব এর কাছে পানাহ চাইবো।

………………………..

সরল পথ
উম্ম হুরায়রা
(২৩ মার্চ ২০১৮)