অমূল্য দিনগুলোর বিশেষ উপহার

আমরা সবসময় সুযোগ সন্ধানী। কোন কাজ কত কম সময়ে কিন্তু সহজে করা যাবে আমরা এটা ভাবি। আবার তার সাথে এটা ও চিন্তা করি কাজটির ফল যেন আশানুরূপ হয়।

আমাদের মহান মালিক আল-খ্বলিক আল্লাহ্ সুবহানাহু তা’আলা তো আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। আমাদের চিন্তাধারা, স্বভাব প্রকৃতি তিনিই সবচেয়ে ভালো জানেন, বোঝেন। আর তাই তিনি আমাদের জন্য অনেক সুযোগ রেখেছেন। তিনি কতই না দয়ালু! তাঁর ইবাদত করতে যেন আমরা ক্লান্ত হয়ে না পড়ি; বরং আমাদের মাঝে যেন উৎসাহ, উদ্দীপনা ও প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি হয় তাই তিনি সহজ, সুন্দর কিছু সুযোগ করে দিয়েছেন।

কখনোই আদেশ করেননি সব কাজকর্ম রেখে সারাক্ষণ তাঁর ইবাদত করতে। বরং আরো বিশেষ বিশেষ সময় তিনি তাঁর বান্দাদের বিশেষ বিশেষ সুযোগ দিয়েছেন। যেন আমরা অল্প সময়ে ও অল্প পরিশ্রমে অনেক বেশি সওয়াব অর্জন করতে পারি; নেক আমলের পাল্লা ভারী করে উনার ক্ষমার দিকে অগ্রসর হতে পারি। উনি বান্দাকে অনেক বেশি ভালবাসেন বলেই বিভিন্নভাবে বারবার ক্ষমার সুযোগ দিয়েছেন।

রমাদানে যেমন পবিত্র লাইলাতুল কদরের রাত হাজার রাত অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ, তেমনি দিনের মধ্যে ও তিনি কতগুলি দিনকে অন্যান্য দিনের চেয়ে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা দিয়েছেন।

মহিমান্বিত রমাদান মাস ব্যতীত সেই বিশেষ দিনগুলির মধ্যে শ্রেষ্ঠ কয়েকটি দিন হচ্ছে যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশটি দিন। যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশদিনের অনেক তাৎপর্য রয়েছে। এ তাৎপর্য অনুধাবন করে আমরা সেই দিনগুলোতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত করতে পারি।

🔳 যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশদিনের তাৎপর্য 
——————————————————–
যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশদিনের তাৎপর্য এত বেশি যে, 
আল্লাহ্ সুবহানাহু তা‌‘আলা এ দিনগুলির ব্যাপারে কসম করেছেন। কসম করা হয় কখন..? কোন বিষয়ের গুরুত্ব বোঝানোর জন্য। আর এখানে তো আমাদের রব মহান আল্লাহ্ সুবহানাহু তা‌‘আলা কসম করেছেন। তিনি যখন কোন কিছুর কসম করেন তা কেবল তার শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদাই প্রমাণ করে। এটা বান্দার জন্য মহা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ মহান সত্তা আমাদের মালিক শুধু অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েরই কসম করেন।

আল্লাহ্ সুবহানাহু তা‌‘আলা কসম করে বলেছেন,

وَ الۡفَجۡرِ 
وَ لَیَالٍ عَشۡرٍ

কসম ফজরের [১]
কসম দশ রাতের [২]

[সূরা আল-ফাজর, আয়াত:১-২]

এখানে ‘কসম দশ রাতের’ বলে যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশরাতের প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে।

রসূলুল্লাহ (সাঃ) এ দশদিনকে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

জাবির (রাঃ)থেকে বর্ণিত রসূল (সাঃ) বলেছেন,

“পৃথিবীর দিনগুলির মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিনগুলি হলো দশকের দিনসমূহ। অর্থাৎ যিলহজ্জের প্রথম দশদিন। জিজ্ঞেস করা হলো, আল্লাহর পথে জিহাদেও কি এর চেয়ে উত্তম দিন নেই? তিনি বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদেও এর চেয়ে উত্তম দিন নেই। হ্যাঁ, কেবল সে-ই যে (জিহাদে) তার চেহারাকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে।”

[মুসনাদ বাযযারঃ১১২৮; মুসনাদ আবী ই‘আলাঃ২০৯০]

🔳 যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিনের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতঃ
———————————————————-
তাৎপর্যের কারণে এ দশ দিনের ইবাদত অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ। এ দশদিনে কিছু মৌলিক ইবাদতের সমন্বয় ঘটে। যেমনঃ সালাত, সিয়াম, হজ্জ, কুরবানী ইত্যাদি। এছাড়া আমরা নফল সালাত, তাকবীর পাঠ, যিকির, দান- সাদাকা ইত্যাদি বিভিন্ন ইবাদত করার চেষ্টা করতে পারি।

🔳সালাত আদায় করাঃ
—————————–
মহান আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলার নৈকট্য অর্জনের প্রথম ধাপ হলো ফরয ইবাদত করা। আর সালাতই হল আল্লাহর নৈকট্য লাভের শ্রেষ্ঠ উপায়। বিচারের দিনে প্রথম জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে সালাত সম্পর্কে। তাই আমাদের ফরয সালাত গুলো আদায় করতে হবে প্রথম ওয়াক্তে। কারণ প্রথম ওয়াক্তের সালাত মহান আল্লাহর পছন্দ। ফরয সালাত গুলো যথাসময়ে সম্পাদন করার পাশাপাশি বেশি বেশি নফল সালাত আদায় করার চেষ্টা করতে হবে। তাহাজ্জুদ, চাশত, ইশরাক ইত্যাদি বিভিন্ন নফল সালাত গুলি আদায়ের চেষ্টা করতে হবে। নফল সালাতের মাধ্যমে ও আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়া যায়। রসূল (সাঃ)বলেছেন,

“তুমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে অধিক পরিমাণ সেজদা কর (নফল সালাত আদায় কর), কারণ যখনই তুমি সেজদা কর, বিনিময়ে আল্লাহ্ তোমার মর্যাদা বৃদ্ধি করেন এবং গুনাহ মোচন করেন।” [মুসলিম]

তবে এটি কেবল যিলহজ্জ মাস নয় বরং অন্য সকল সময়ের জন্য ও প্রযোজ্য।

🔳 সিয়াম পালন করাঃ
—————————-
সিয়াম পালন আল্লাহ্ র নৈকট্য লাভের জন্য আরেকটি উত্তম ইবাদত। তাই এ দিনগুলিতে নফল সিয়াম পালন করা খুবই ফযীলতপূর্ণ। হাদীসে কুদসীতে সিয়ামকে আল্লাহ্ নিজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেছেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,

‘আল্লাহ বলেছেন, ” আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই তার নিজের জন্য; শুধু সিয়াম ছাড়া। কারণ, তা আমার জন্য। তাই আমিই এর প্রতিদান দেব। “
[বুখারীঃ ১৯০৪; মুসলিমঃ ২৭৬২]

সিয়াম যে এক বড় মর্যাদাসম্পন্ন ও আল্লাহর কাছে প্রিয় আমল তা আমরা অনুধাবন করতে পারি এ হাদীস থেকেই। সিয়াম জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার জন্য ঢাল স্বরূপ।

তবে রসূলুল্লাহ (সাঃ) আরাফার দিনের সিয়ামের প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেছেন এবং এর মর্যাদা বর্ণনা করেছেন। আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রসূল (সাঃ) বলেছেন,

“আরাফার দিনের সিয়াম আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন বিগত ও আগত বছরের গুনাহের কাফফারা হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন।” [মুসলিমঃ ১১৬৩]

সুবহানআল্লাহ্…! এ হাদীসের ভিত্তিতে যারা হজ্জে যায়নি তাদের জন্য যিলহজ্জের নয় তারিখ সিয়াম পালন করা সুন্নত। তবে যারা হজ্বে গিয়েছেন, তাদের জন্য এদিন সিয়াম না রাখা উচিত। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রসূল (সাঃ) আরাফার দিনে আরাফার ময়দানে রোযা রাখতে নিষেধ করেছেন। [সুনানে আবু দাউদঃ২৪৪২]

🔳 হজ্জের দিনঃ
——————–
এই দিনগুলির মধ্যে রয়েছে আরাফার দিন। আরাফার দিন হলো বড় হজ্জের দিন। এটি ক্ষমা ও মাগফিরাতের দিন। জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও নাজাতের দিন। যিলহজ্জের এই দশকে যদি ফযীলতের আর কিছু না থাকত তবে এ দিবসটিই তার মর্যাদার জন্য যথেষ্ট হত। এ দিনের ফযীলত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, 
“আরাফা দিবসই হজ্জ”। [তিরমিযী : ৮৯৩; নাসায়ী : ৩০১৬]

হজ্জের দিন বা আরাফার দিন ইখলাস ও বিশ্বাসের সাথে এ কালিমাটি বেশী বেশী পড়া প্রয়োজন। রসূল (সাঃ) আরাফার দিন এ কালিমাটি খুব বেশী পড়তেন। 
[তিরমিযিঃ ৩৫৮৫, মুসনাদে আহমাদঃ ৬৯২২]

কালিমাটি হলো–

لَا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ بِيَدِهِ الْخَيْرُ وَهُوَ عَلٰى كُلَّ شَيْئٍ قَدِيْرٍ

বাংলা উচ্চারণঃ লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু লাহুল মূলকু ওয়া লাহুল হামদু বিয়াদিহিল খাইরু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়্যিং ক্কদির।

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

“আরাফার দিনে মহান আল্লাহ্ এতো অধিক সংখ্যক লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন যা অন্য কোনদিন দেন না। তিনি এ দিনে বান্দাদের নিকটবর্তী হন এবং তাদের নিয়ে ফেরেশতাদের কাছে গর্ব করে বলেন তোমরা কি জানো আমার এই বান্দারা আমার কাছে কি চায়?” [মুসলিম]

🔳 তাকবীর পাঠ করাঃ
——————————-
এ দশ দিনের ইবাদতের মধ্যে–

তাকবীর (আল্লাহু আকবর), তাহলিল
(লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্), তাহমীদ (আলহামদুলিল্লাহ্) পাঠ উল্লেখযোগ্য।

যিলহজ্ব মাসের ৯ তারিখের ফজর থেকে ১৩ তারিখের আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরয সালাতের পর একবার তাকবীর বলা ওয়াজিব। পুরুষের জন্য উচ্চস্বরে ,আর মহিলাদের জন্য নীরবে। একবারের অধিক পড়লে ও সমস্যা নেই।

ইমাম বুখারী রহঃ বলেছেন, ইবনে ওমর (রাঃ) এবং আবু হুরায়রা (রাঃ) এ দশ দিন তাকবীর বলতে বলতে বাজারে বের হতেন। মানুষরাও তাদের দেখে তাকবীর বলতো। ইবনে উমর (রাঃ) মিনায় অবস্থানের দিনগুলোতে পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের পরে তাঁবুতে, বিছানায়, বসার স্থানে, চলার পথে সর্বত্র তাকবীর পাঠ করতেন।

মুসলমানদের উচিত এ সুন্নতটি পুনর্জীবিত করা, যা বর্তমান যুগে প্রায় হারিয়ে গেছে এবং দুঃখ জনক হলেও সত্য, সাধারণ মানুষের পাশাপাশি নেককার লোকেরাও এটি প্রায় ভুলতে বসেছে। অথচ আমাদের পূর্বপুরুষগণ ছিলেন এর সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম।

🔳 তাকবীর বলার নিয়মঃ
“আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর ওয়া লিল্লাহিল হামদ্।”

🔳 কুরবানীর দিনের মর্যাদাঃ
————————————
এই মহান দিনটির মর্যাদার ব্যাপারে অনেক মুসলমানই অসচেতন। কোন কোন আলিমের মতে কুরবানীর দিনটি বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ দিন। রসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন,

“আল্লাহর কাছে সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ দিন হলো কুরবানীর দিন অতঃপর স্থিরতার দিন।” (অর্থাৎ কুরবানীর পরবর্তী দিন। কারণ, যেদিন মানুষ কুরবানী ইত্যাদির দায়িত্ব পালন শেষ করে সুস্থির হয়।)

[নাসায়ীঃ১০৫১২; ইবন খুযাইমা, সহীহঃ ২৮৬৬]

এই দশদিনের অন্যতম সেরা ও প্রিয় আমল হলো কুরবানী। সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য কুরবানী করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর নবীকে কুরবানী করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেছেন,

﴿ فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَٱنۡحَرۡ ٢ ﴾ [الكوثر: ٢]

“আপনি আপনার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করুন ও কুরবানী করুন।”
[সূরা আল-কাউসার, আয়াতঃ২]

কুরবানীর পশু জবাই ও গরিবদের মধ্যে এর মাংস বিতরণের মাধ্যমে আল্লাহর বিশেষ নৈকট্য লাভ হয়। এর দ্বারা গরিবদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ পায় এবং তাদের কল্যাণ সাধিত হয়। হযরত আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রসূল (সাঃ) ইরশাদ করেছেন,

“কুরবানীর দিনে বনী আদম এমন কোন কাজ করতে পারে না, যা আল্লাহর নিকট রক্ত প্রবাহিত করা তথা কুরবানী করার চেয়ে বেশি প্রিয়। কুরবানীর পশু সকল শিং, তাদের পশম ও তাদের খুরসহ কেয়ামতের দিন (কুরবানীদাতার পাল্লায়) এসে হাজির হবে। আর কুরবানীর পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই আল্লাহর নিকট সম্মানের স্থানে পৌছে যায়। সুতরাং তোমরা প্রফুল্লচিত্তে কুরবানী করবে।”

[সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-১৪৯৩]

যারা কুরবানী করার ইচ্ছে পোষণ করেছেন, তারা যিলহজ্ব মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার পর থেকে হাত পায়ের নখ, মাথার চুল ও অবাঞ্ছিত চুল ইত্যাদি কাটবেন না ; যদি ৪০ দিন না হয়ে থাকে এগুলো না কাটার মেয়াদ। যদি ৪০ দিনের বেশি হয়ে থাকে, তাহলে এসব কেটে ফেলা আবশ্যক। নতুবা ১০দিন পর কুরবানীর পর পরিস্কার করবেন। এ কাজটি সুন্নাত। হযরত উম্মে সালমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রসূল(সাঃ) ইরশাদ করেছেন যে,

” যখন যিলহজ্জের প্রথম দিনের সূচনা হয়,আর তোমাদের কেউ কুরবানী করার ইচ্ছে করে, সে যেন চুল-নখ ইত্যাদি না কাটে।”
[সুনানে নাসায়ী কুবরাঃ ৪৪৫৪, সুনানে ইবনে মাযাহঃ৩১৪৯]

🔳 দান-সাদাকা করাঃ
—————————-
এ দিনগুলোতে যে আমলগুলো বেশি বেশি দরকার তার মধ্যে অন্যতম হলো সাদাকা। দান বা সাদাকা মহান আল্লাহর ক্রোধকে নির্বাপিত করে। আল্লাহ্ তা‘আলা মানুষকে সাদাকা দিতে উদ্বুদ্ধ করেছেন।

“হে মুমিনগণ, আমি তোমাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা হতে ব্যয় কর, সে দিন আসার পূর্বে, যে দিন থাকবে না কোনো বেচাকেনা, না কোনো বন্ধুত্ব এবং না কোনো সুপারিশ। আর কাফিররাই যালিম।” [সূরা আল-বাকারা, আয়াতঃ ২৫৪]

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকেবর্ণিত, রসূলুল্লাহ বলেন,

“সাদাকা সম্পদকে কমায় না, ক্ষমার মাধ্যমে আল্লাহ বান্দার মর্যাদা বৃদ্ধি করেন এবং কেউ আল্লাহর জন্য বিনয়ী হলে আল্লাহ তাকে উঁচু করেন।” [মুসলিমঃ ৬৭৫৭]

আমরা সামর্থ্য অনুযায়ী বেশি বা অল্প কিছু দান করে ও এ সময় মহান আল্লাহ্ সুবহানাহু তা’আলার সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করতে পারি।

🔳 যিকিরঃ 
—————
অন্যান্য সময়ের চেয়ে আমরা এ সময়ে বেশি যিকির করতে পারি। অযু ছাড়াও সর্বাবস্থায় (ওয়াশরুম ব্যতীত) এ সহজ পরিশ্রমবিহীন ইবাদতটি করা যায়। হাঁটতে হাঁটতে, কাজ করতে করতে, বিশ্রাম নেওয়ার সময় বা জ্যামে বসে থেকে ও আমরা আল্লাহর প্রিয় এ কাজটি করতে পারি।

🔳 ইস্তেগফারঃ 
——————
অন্য সময় আমরা যতটুকু তাওবা বা ইস্তেগফার করি এ দিনগুলিতে তার চেয়ে অনেক অনেক গুণ বেশি তাওবা, ইস্তেগফার করার জন্য আমাদের চেষ্টা করতে হবে। জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত হয়েও আমাদের প্রিয় রসূল (সাঃ) প্রতিদিন সত্তরবারের বেশি ইস্তেগফার করতেন। আর সেখানে আমাদের মতো গুনাহগার বান্দাদের অনেক বেশি ইস্তেগফার করা উচিত।

আমাদের সবাইকে আল্লাহ্ সুবহানাহু তা’আলা যেন যিলহজ্জ মাসের ইবাদত গুলি করার তৌফিক দান করেন। অমূল্য দিনগুলোর বিশেষ উপহার আমল গুলো যেন আমাদের আমলনামায় জমা করতে পারি। আমরা সবাই যেন দয়ালু আল্লাহ্ সুবহানাহু তা’আলার মাগফিরাত প্রাপ্ত হয়ে জান্নাতের পথে অগ্রসর হতে পারি।

————————

অমূল্য দিনগুলোর বিশেষ উপহার 
ইসমত কণক

জুলাই ৩১, ২০১৯ইং