বিদায় রামাদান

কত দ্রুত শেষ হয়ে গেল রামাদান মাস। রামাদান মাসে আমাদের সবচেয়ে বড় চাওয়াটা কী ছিল? আমরা চেয়েছি যেন আল্লাহ আমাদেরকে মাফ করে দেন। যে অজস্র গুনাহ জীবনের প্রতিটা পাতায় পাতায় জমা করেছি, সেই গুনাহগুলো সব মাফ হয়ে যাবে, মুছে যাবে। আমরা শিশুর মত পবিত্র হয়ে যাব।


সারা বছর আমাদের মনেও অনেক কষ্ট জমা হয়। কেউ খোঁচা মেরে দুটো কথা বলে, কেউবা খারাপ ব্যবহার করে। কেউ মেসেজের রিপ্লাই দেয় না, কেউ ব্লক করে দেয়। কেউ অসম্মান করে, কেউ বা জুলুম করে।


রামাদানের এই শেষ রাত। এইতো রামাদানের সুশীতল বাতাস বইছে। এক রাশ আফসোস পেছনে ফেলে রামাদান আমাদের ছেড়ে চলে যাবে এবারের মতো। আবার শুরু হবে শয়তানের অত্যাচার। আবারও হয়ত অজস্র গুনাহর মাঝে ডুবে যাব।


এই যুগের দুনিয়া নিয়ে মেতে থাকা লোকেদের জন্য নতুন বছর মানে অনেক কিছু। পহেলা বৈশাখ তাদের পাপ-পঙ্কিলতাকে ধুয়ে নেবে — এই তাদের গান। কিন্তু আমাদের মুসলিমদের বিশ্বাস হল, রামাদান আমাদের গুনাহগুলোকে মুছে দেবে।


আমাদের কি সেই সাহাবির কথা মনে আছে, যার খুব বেশি নফল সালাত ছিল না, খুব বেশি নফল সাওমও তিনি আদায় করেন নি। কিন্তু একটা কাজের মাধ্যমে তিনি জান্নাতের হক্বদার হয়ে গিয়েছিলেন। কী সেই কাজ? ঘুমোনোর আগে সব মুসলিম ভাইবোনকে ক্ষমা করে দেওয়া।


আমাদেরও খুব বেশি আমল নেই, খুব বেশি ইলম নেই, যা দিয়ে আমরা জান্নাতে যাওয়ার স্বপ্ন দেখব। কিন্তু একটা কাজ তো করতেই পারি। যারা আমাদের কষ্ট দিয়েছে, আমরা চেষ্টা করব রামাদানের এই শেষ রাতে তাদেরকে ক্ষমা করে দিতে। ক্ষমা করতে চেষ্টা করব, কারণ আমরা নিজেরাও তো আল্লাহর ক্ষমা পেতে উদগ্রীব হয়ে আছি!


আল্লাহ আমাদের সবাইকে মাফ করে দিক। আমাদের রামাদানের আমলগুলো কবুল করে নিক। আমাদের সবার ঈদগুলো সুন্দর হোক।

বিদায় রামাদান
আনিকা তুবা

জুন ০৩, ২০১৯ইং