প্যারেন্টিং জানা কি খুব জরুরী?

প্যারেন্টিংএর জ্ঞান রাখাটা কি খুব জরুরি? বড়রা বলেন, “এগুলো সব নতুন কথা।
আমাদের সময় বাচ্চা পালি নাই?”

অতি ব্যস্ত ভাইবোনেরা বলেন, “আমাদের ভাই সময় নাই। ভাল মানের স্কুল কলেজে পড়বে, ভাল কাজ করবে এমনিতেই ভাল মানুষ হয়ে যাবে।”

আবার অনেকে বলেন, “এতো সময় কই? বাকি সব কাজ কে করবে? আমাকে দিয়ে এসব হবে না, আর খেয়ে দেয়ে কাজ নাই!”

কেউ আবার শোনান, “আজাইরা যত্তসব কথাবার্তা!”

আরো আছে!

কেউ কেউ স্রেফ স্বীকার করেন, “বাচ্চা কথা শোনে না, আমি পারবো না!”

কথা হচ্ছে Parenting নিয়ে। জি হ্যা, উপরের কথা গুলো শুনতে শুনতেই অনেকে সামনে বাড়ছেন। নিঃসন্দেহে প্যারেন্টিং কোন সহজ বিষয় নয়, কিন্তু আবার এতোটাও জটিল বা অপ্রয়োজনীয় নয়! 

যেভাবে দেখে এসেছি সেভাবে বাচ্চা পালতে হবে এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারনা। সময়, পরিবেশ, পরিস্থিতি সব কিছুর উপর নির্ভর করছে আপনার বাচ্চাকে কিভাবে আপনি গড়ে তুলবেন; কী কী শিখাবেন ।

এখনকার সময়ের বাচ্চারা অনেক বেশি স্মার্ট মা’ শা আল্লাহ। আপনি না চাইলেও পাশের বাসা বা স্কুলে পাশে বসা বন্ধু থেকে সে অনেক কিছুই অনেক অল্প বয়সে জেনে যাচ্ছে যা আপনি আমি হয়ত খোঁজও রাখতে পারছি না। তাদের আচার আচরনও বিগত জেনারেশানের তুলোনায় অনেকটাই রাফ এ্যান্ড টাফ। 

সবাই এখন বলে/ভাবে আমার বাচ্চাকেও কি তাহলে ছেড়ে দিব? নাকি কড়া শাসনে রেখে আরো বিগড়ানোর পথ বাতলে দিব? 
এসবের উত্তর জানার জন্যেই প্যারেন্টিং বিষয়ে পড়াশোনা করাটা অত্যন্ত জরুরি।

বাচ্চাকে কোন বয়সে কিসের সাথে পরিচয় করাতে হবে, কিভাবে করাতে হবে সেটা হয়তো আমার / আপনার জানা নাও থাকতে পারে। তাই বলে বসে থাকলে তো আর চলবে না। নিজের এবং সন্তানের ভবিষ্যৎ তো বর্তমানের সাথেই জড়িত! আর যেখানে নেক সন্তান রেখে যাওয়াটা একজম মুসলিমের জন্য সাদাকা যারিয়া। 

– “তোমাদের সিস্টেম অনুযায়ী চললেই কী সন্তান নেক হয় নাকি?”
– “আলেমের ঘরে কি যালেম হয়না?”

জি, এই প্রশ্নের সম্মুখীনও বহুবার হতে হয়েছে।

না, সন্তান তেমনি হবে যেমনটা তার ক্বদরে (ভাগ্য) লেখা আছে। কিন্তু আমাদের কাজ আমাদের ১০০% দিয়ে চেষ্টা করে যাওয়া এবং সর্বক্ষণ দুয়া করতে থাকা। ভুলে গেলে তো চলবে না, সন্তানের জন্য বাবা মায়ের দুয়া আল্লাহ কবুল করে থাকেন।

পরিশেষে বলতে চাই, প্যারেন্টিং বিষয়টাকে যতো বেশি যন্ত্রনাদায়ক মনে করবেন ততো বেশি নিজেরই কষ্ট হবে। ব্যাপারটাকে যদি এমন মনে করেন যে, আল্লাহ তা’আলা তার একটা সৃষ্টিকে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন আমানাহ হিসেবে যার সাথে আমাদের জান্নাত জাহান্নাম অনেকাংশে জড়িত, এবং যাকে আমাদের জন্য চক্ষু শীতলকারী করা হয়েছে (বাচ্চারা প্রতি রাতে ঘুমানোর পর তাদের দিকে চেয়ে একবার চিন্তা করে দেখবেন প্লিজ) তাদেরকে সঠিকভাবে প্রতিপালন করার জন্য – আমরা কী আরেকটু ভালোভাবে নিজেদেরকে গুছিয়ে নিতে পারি না?

…………………………………..

প্যারেন্টিং জানা কি খুব জরুরী?
সাকিবা আহমেদ
(৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৮)